২১'র অনুরণন
আমি '৫২ দেখিনি,
নাসারন্ধ্রে শুধু তার ঘ্রাণ শুঁকে যাই।
২১'র বিভীষিকা আমাই
স্পর্শ করেনি,
যার রক্ত-রঙে সৃষ্ট বর্ণ
আজ জিহ্বার আগায় বর্তমান।
দেখিনি ১৪৪'র
নৃশংস শৃঙ্খল, কর্ণকুহরে তা ভঙ্গের শিঞ্জন শুনে যাই।
রফিকের চরণ মিলিয়ে ঐ প্রভাতে
পদাঙ্ক পরেনি,
বঙ্গের ধূলিকণা জানে অরুণ ২১'র অমর সেই আখ্যান।
বীরের দর্শন আমি পাইনি, জনারণ্যে মিশে গেছে বরকতের কায়;
৫৪ ভাগের অধিকার আদায়ে বিসর্গ কদম যার দমেনি,
কৃষ্ণনাথে, বাবলায়,
পুরা বাংলায় যার বিচরণ অবিরাম আপ্রাণ।
আমি দেখিনি সেদিনের বীভৎসতা, তুলিতে তাই ‘অ’, ‘আ’ সাজাই।
মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে কণ্ঠ আমার সেদিন হাঁকেনি,
সালামের তর্জনে এ তীরে পাল তুলেনি পাকের উর্দু
সাম্পান।
’৫৬ যে ললাটে জোটেনি, পশ্চিমের
বশ্যতায় আমিয় দম্ভ পাই।
অহিউল কি জানে ভাষা কি?
তাঁর বক্ষও যে রেহায় পায়নি;
বাংলার নীলিমায় শফিউর, জব্বার নামের নক্ষত্রগুলো চির অম্লান।
প্রভাত ফেরি আমি দেখেছি, এ
যে নগ্নপদে শহীদ মিনার ছুটে যাওয়া,
বেদীতে নম্রহস্তে ফুল দেওয়া,
নিরবে নিভৃতে শহীদদের সালাম দেওয়া;
একুশ কি আমি জেনেছি, জিন্নাহ-নাজিমের
মুখে তালা দেওয়া,
একুশ কি আমি বুঝেছি, ১৪৪
এ দাঁড়িয়ে ‘ক’, ‘খ’ এ প্রাণ দেওয়া,
একুশ মানেই যে রক্তক্ষয়ী আত্মায়
স্বাধীন ভাষার বার্তা দেওয়া।
একুশ আজ ঘোষিত আন্তর্জাতিকতার,
একুশ আজ সস্রদ্ধ নিরাকার;
বাংলা আমার কলমের অহংকার,
সে আমার মুখের শাশ্বত অলংকার.
No comments